শুরুর কথা!

إن الحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره ونعوذ بالله من شرور أنفسنا ومن سيئات أعمالنا من يهده الله فلا مضل له ومن يضلل فلا هادي له وأشهد أن لا إله إلا الله وحده لا شريك له وأشهد أن محمدا عبده ورسوله

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللهَ حَقَّ تُقَاتِهِ، وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنْتُمْ مُسْلِمُونَ

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِِ

ইসলাম নিয়ে বাঙ্গাল নাস্তিকের অ্যালার্জি বেশ পুরনো। সমানভাবে সব ধর্মের বিরোধিতার দাবি করলেও বাংলাভাষী “মুক্তমনা”দের মাঝে আর সব কিছুর চাইতে ইসলামবিদ্বেষ বেশি দেখা যায়।

তাই থ্যাংকসগিভিং থেকে কালীপূজা, ম্যাকডোনাল্ডস থেকে কেএফসি – সব কিছুর মাঝে কিছু না অর্থ খুজে পেলেও বাঙ্গাল নাস্তিক ঈদ উল আজহার মাঝে খুজে পায় নিষ্ঠুরতা। হজ্বের জন্য মুসলিমরা নিজেরা টাকা খরচ করলে তাদের গাত্রদাহ হয়, কিন্তু ফি বছর পূজোমন্ডপের জন্য কোটি টাকা খরচ করার মাঝে কিংবা পহেলা বৈশাখে সোনার দামে ইলিশ খেয়ে বাঙ্গালিত্বের সাধনা করায় তারা পরম প্রশান্তি খুজে পান।
.
একথা অনস্বীকার্য যে যারা কয়েক দশকের প্রথাকে হাজার বছরের সংস্কৃতি বলে চালিয়ে দিতে চান, যারা মুসলিম পরিচয়ের আগে ম্যাপের কাল্পনিক আঁকিবুঁকিকে প্রাধান্য দিতে চান সেইসব শহুরে বাঙ্গালের বড় একটা অংশ প্রভাবিত কলিকাতার দাদাবাবুদের দ্বারা।

আর তাই বুঝি শহুরে সুশীল বাঙ্গালরা দাদাবাবুদের বড়ো বড়ো সংকীর্ণ মনের মতো তাদের আন্তরিক ম্লেচ্ছবিদ্বেষেরও উত্তরাধিকারী। আর তাই ইসলামবিদ্বেষী হওয়াকে এক অর্থে শহুরে সুশীল বাঙ্গালের কালচার এবং কালচারিং-এরও অংশ।
.
আরেকটা প্রভাবক হল প্রথাগত প্রথাবিরোধিতা। এ বিষয়টা বেশ মজার। বাঙ্গাল “মুক্ত” চিন্তক, “মুক্ত”মনা, সুশীল, প্রগতিশীলদের একটা নির্দিষ্ট সিলেবাস আছে। নির্দিষ্ট বাক্স আছে।

বলা যায় মাসের শুরুতে বাজারের লম্বা লিস্টির মতো তাদেরও একটা চেকলিস্ট আছে। বাঙ্গালের প্রথাবিরোধিতার প্রথা অনুযায়ী, প্রথাবিরোধি হতে হলে, “মুক্ত” চিন্তক হতে হলে, “মুক্ত” মনের, “স্বাধীন” মানুষ হতে হলে, আপনাকে অবশ্যই ইসলামবিদ্বেষী হতে হবে।

হুমায়ূন আজাদের অসংলগ্ন প্রলাপকে পরম বিশুদ্ধ জ্ঞান, তসলিমা নাসরিনের কাঁচা হাতের চটিকে মহাকাব্য এবং আরজ আলি মাতুব্বরের বস্তাপচা লজিকাল ফ্যালাসিকে বিশুদ্ধ যুক্তিবিদ্যার চূড়া বলে মনে করতে হবে।
.
বাঙ্গাল নাস্তিকের প্রথাগত প্রথাবিরোধিতার চেকলিস্ট অনুযায়ী আপনাকে থাবা বাবাকে যুগের মার্ক টোয়েন, আসিফ মহিউদ্দিনকে বারট্রান্ড রাসেল আর অভিজিৎ রায়কে হাল আমলের জিওনার্দো ব্রুনো বলে মনে করার মত বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হতে হবে। ডকিংস, হিচেন্স, স্যাম হ্যারিস আর লরেন্স ক্রউসদের মুক্তচিন্তার নবী মনে করতে হবে।

তাদের অ্যাড হমিনেম, রেড হেরিং, স্ট্র-ম্যানসহ নানা লজিকাল ফ্যালাসিকে ওয়াহী বলে বিশ্বাস করতে হবে। বস্তুত, প্রথাবিরোধী হতে হলে ব্যাপকভাবে আপনাকে বাঙ্গাল নাস্তিকের চেকলিস্ট অনুযায়ী প্রথার অনুসরণ করতে হবে।
.
এসব কারনেই আমরা দেখি যখনই কেউ ইসলাম নিয়ে কোন কথা বলে তখন নিজ উদ্যোগে, পায়ে পা লাগিয়ে নাস্তিকরা ঝগড়া করতে হাজির হয়ে যায়। আর অধিকাংশ সময় নাস্তিকদের যুক্তি ডোমদের মতন গালিগালাজ এবং শব্দসন্ত্রাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।

আমার ধারণা নাস্তিকদের, বাঙ্গাল নাস্তিকরা একটা বাধ্যবাধকতা অনুভব করেন সর্বাবস্থায়, কোন না কোন ভাবে ইসলামবিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবার। সম্ভবত এর মাধ্যমে তারা নিজেদের বুদ্ধিবৃত্তিক “উৎকর্ষ”, “প্রথাবিরোধিতা”র প্রমান দিতে চান। তারা সম্ভবত বোঝাতে চান তাদের ইসলামবিদ্বেষ কোন ভাবে তাদের বিশেষায়িত করে।
.
আর তাই বছরের পর বছর সেইসব ধরাবাঁধা কুযুক্তি, রেটরিক আর বুদ্ধিবৃত্তিক হাতসাফাই তারা রিপিট করে যায়। আর অজ্ঞতার কারনে অনেক সাধারন মুসলিম এতে বিভ্রান্তও হয়।

সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হল নাস্তিকদের বা সঠিকভাবে বললে ইসলামবিদ্বেষীদের, তাদের ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানোর ব্যাপারে যে স্পৃহা দেখা যায়, মুসলিমদের মধ্যে ইসলামকে রক্ষার ক্ষেত্রে সেই একই স্পৃহা দেখা যায় না। বরং অনেক ক্ষেত্রেই আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং আপোষকামীতার মনোভাব আমাদের চলে আসে।

.
ফলে প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে অনলাইনে নাস্তিক-ইসলাম্বিদ্বেষীরা তাদের বস্তাপচা আবর্জনা প্রচার করে গেছে। এখনও করছে।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাদের কুযুক্তি, বুদ্ধিবৃত্তিক হাতসাফাই এবং সৃষ্ট সংশয়ের প্রত্যুত্তর এবং ব্যবচ্ছেদে ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী, গোছানো কোন প্রচেষ্টা হাতে নেওয়া হয় নি। আর এই শূন্যতাপূরনের ইচ্ছা থেকেই শুরু হয় সত্যকথন।
.
সত্যকথনের যাত্রা শুরু অবিশ্বাসী সেকুলারগোষ্ঠী তথাকথিত স্বঘোষিত ‘মুক্তমনা’ দের উথাপিত সাধারণ যুক্তিসমূহের (arguments) পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করার উদ্দেশ্য।

নাস্তিক-অজ্ঞেয়বাদী-সেক্যুলার এবং তথাকথিত মুক্তমনারা সাধারন মুসলিমদের অজ্ঞতার সুযোগে বিজ্ঞান ও মুক্তচিন্তার আড়ালে সুকৌশলে প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে অনলাইনে সুপরিকল্পিতভাবে যে ইসলামবিদ্বেষ ছড়িয়ে যাচ্ছে তার মোকাবেলার জন্য এরকম একটি প্রচেষ্টা অনেক আগে থেকেই প্রয়োজন হয়ে দাড়িয়েছিল।
.
যারাই সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা ব্লগে বাংলায় লেখালেখি কিংবা নিয়মিত লেখা পড়ার সাথে যুক্ত আছেন তারা নিঃসন্দেহে বাংলা ভাষায় এধরনের একটি প্রচেষ্টার গুরুত্ব অনুভব করে থাকবেন।

এই সাইটে মূলতঃ অবিশ্বাসী সেকুলারগোষ্ঠী  তথাকথিত স্বঘোষিত ‘মুক্তমনা’ দের উথাপিত সাধারণ যুক্তিসমূহের (arguments) পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করা হবে ইনশা’আল্লাহ! 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার অস্তিত্ব অস্বীকার করতে তথাকথিত ‘মুক্তমনা’রা নামসর্বস্ব কিছু যুক্তি-প্রশ্ন, আউট অফ কন্টেক্সট সাইন্টিফিক ডেটা এবং কুর’আন ও হাদিসের বিভিন্ন বক্তব্যের ব্যাপারে নিজেদের মত ব্যখ্যা দাড় করিয়ে ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞ মুসলমান ভাই-বোনদের বিভ্রান্ত ও প্রতারিত করে থাকে।

বাস্তবতা হচ্ছে, বর্তমান সময়ের নাস্তিকতার দিকে আহ্বানকারী এসকল কাফেরদের অবস্থা পূর্ববর্তী কাফেরদের মতই।

তারা বলে, আমাদের পার্থিব জীবনই তো শেষ; আমরা মরি ও বাঁচি। মহাকালই আমাদেরকে ধ্বংস করে। তাদের কাছে এ ব্যাপারে কোন জ্ঞান নেই। তারা কেবল অনুমান করে কথা বলে।  – [সুরা জাসিয়া: ২৪]

অবশ্যই! সবাই সত্য মেনে নিবে না। আমাদের উদ্যোগ মূলতঃ সত্যানুসন্ধানী ব্যক্তি ও সংশয়গ্রস্থ সেসব ভাইদের জন্য যারা হন্য হয়ে সত্য ও যথাযথ উত্তর খুজে বেড়ান।

ইনশা’আল্লাহ! আলোচ্য বিষয়ে সামনে আসবে যুক্তিনির্ভর মেটাফিজিকাল ও একাডেমিক আলোচনা। ইনশা’আল্লাহ তা যথেষ্ট সহজবোধ্য ও আশ্বস্তকর হবে বলেই আমরা মনে করি। আল্লাহ তা’আলা সহজ করুন। আমিন।

এখানে যে সকল ভাইদের লেখা এবং ভিডিও আসছে সেগুলোর কপিরাইট সম্পূর্ণ লেখক ভাইদের।

দর্শন অথবা বিজ্ঞান শেখানো এই সাইটের মূল উদ্দেশ্য নয়। আল্লাহ তা’আলার অস্তিত্ব ও ইসলাম সম্পর্কে নাস্তিক-মুরতাদদের সৃষ্ট সংশয়ের নিরসন ঘটানোই আমাদের উদ্দেশ্য।

… নাস্তিক-মুরতাদদের প্রত্যুত্তরগুলো একত্রিত করা হয়েছে কেবলমাত্র এবং একমাত্র আল্লাহ তা’আলার সন্তুস্টি অর্জনের উদ্দেশ্য।।

এখন পর্যন্ত মুক্তমনাদের যে সকল আপত্তিসমূহের খন্ডন করা হয়েছে এবং যে সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে- (নিয়মিত আপডেট হবে)

গল্পাকারে নাস্তিকতার খন্ডন – সাজিদ সিরিজ (আরিফ আজাদ) (আপডেট হবে ইনশা’আল্লাহ)

আরও উত্তর


(সন্দেহের বেড়াজালেঃ ইসলামবিদ্বেষী সাধারণ প্রশ্নের উত্তরে অসাধারণ সহজবোধ্য আলোচনা)

The One Message এর সৌজন্যে


ভাই তোয়াহা আকবারের একটি অসাধারণ ভিডিও – সব কিছু কি আপনা আপনিই সৃষ্টি হয়েছে!!? 

ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ!